ওরা ‘ভালোবেসে’ খাওয়ায় জুস, বিনিময়ে কেড়ে নেয় সব!

রংপুরের মিঠাপুকুরে অজ্ঞান পার্টির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার ভাংনী এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। আটককৃতরা হলেন, মিঠাপুকুরের কাফ্রিখাল ইউনিয়নের কিশামত জালাল গ্রামের আব্দুল ওহাবের ছেলে নুর আলম ওরফে তারেক ওরফে সাগর ওরফে রানা (৩৮),

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থানার কিসমত শ্রীনগর গ্রামের রশিদ বেপারীর মেয়ে সাথী আক্তার সুমাইয়া (১৮) ও বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানার শাকবুনিয়া গ্রামের স্বপন জমারদারের মেয়ে সাথী আক্তার সুমি (২০)। তাদের আটকের সময় একটি চার্জার রিকশা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও আটটি মোবাইল ফোনসহ নগদ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার আটককৃতদেরকে রংপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। রংপুর জেলা পুলিশের মিঠাপুকুর-পীরগঞ্জ (ডি) সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, গত ১২ মার্চ যাত্রীবেশে ভাড়ায় ওঠে কৌশলে পীরগঞ্জের পদ্মহার গ্রামের অটোচালক আব্দুর রাজ্জাককে (৪০) জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অটোরিকশা নিয়ে যায়।

এঘটনায় তিনি মিঠাপুকুর থানায় অভিযোগ করেন। এর আগেও যাত্রীবেশে ওই চক্রের সদস্যরা মিঠাপুকুর থেকে দিনাজপুর যাবে বলে অপর একটি অটোরিকশা ভাড়া নেন। পরে সেখান থেকে নবাবগঞ্জে একটি হোটেলে দুপুরের খাবার খান। এরপর ভেন্ডাবাড়ী নামক স্থানে এসে চালকসহ তারা সবাই জুস পান করেন। এসময় কৌশলে চালককে জুসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়।

এতে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। অজ্ঞান হওয়ার পর তাকে মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর এলাকায় ফেলে দিয়ে তার অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায় চক্রটি। এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এরমধ্যে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মিঠাপুকুরের ভাংনী বাজার এলাকা থেকে খবর আসে, জুস খাইয়ে অটোরিকশা ছিনতায়ের চেষ্টা করা হলে দুই নারীকে আটক করেছে স্থানীয়রা।

খবর পেয়ে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই দুই নারীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে অটোরিকশা চুরির চাঞ্চল্যকর তথ্য। এদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দলের মূলহোতা নুর আলম ওরফে তারেক ওরফে সাগর ওরফে রানাকে রংপুর শহরের সুলতানের মোড় এলাকা থেকে রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।

এএসপি কামরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এ গ্রুপের মূল পরিকল্পনাকারী নুর আলম। তারা প্রথমে যাত্রীবেশে চার্জার রিকশা, অটোরিকশা বা মোটরসাইকেল ভাড়া করেন। তারপর চালকের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করে তাকে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর সুবিধামত জায়গায় ফেলে দিয়ে চার্জার রিকশা, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, মোবাইল, টাকাসহ মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পালিয়ে যান।